মেয়েদের বাচ্চা হওয়ার পর পেট ঝুলে যাওয়ার কারণটি মূলত গর্ভধারণের সময় শরীরে অনেক পরিবর্তন ঘটে, বিশেষ করে পেটের ত্বক ও পেশীকে ব্যাপক প্রসারিত হতে হয়। এর ফলে ত্বক অতিরিক্ত স্ট্রেচ হয়ে যায় এবং কিছু সময় পরে, পেটের ত্বক ও পেশী তাদের আগের অবস্থানে ফিরে আসতে সময় নেন, তবে সবসময় পুরোপুরি ফিরে আসতে পারে না।
পেট ঝুলে যাওয়ার কারণ:
- গর্ভকালীন প্রসারণ: গর্ভাবস্থায় বাচ্চা বড় হওয়ার জন্য পেটের ত্বক এবং পেশী প্রসারিত হয়ে যায়। কিছু সময় পরে এই পেশী ও ত্বক পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরতে পারে না।
- হরমোনাল পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রভাব ফেলে, যেমন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, ফলে পেটের ত্বক ঝুলে যেতে পারে।
- ওজনের দ্রুত বৃদ্ধি ও কমে যাওয়া: গর্ভাবস্থায় দ্রুত ওজন বাড়ানো এবং তারপর প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমে যাওয়ার ফলে ত্বককে সময় লাগে তার স্থিতিস্থাপকতা ফিরে পেতে।
পেট ঝুলে যাওয়ার থেকে বাঁচার উপায়:
- নিয়মিত শরীরচর্চা:
- পেটের ব্যায়াম যেমন প্ল্যাঙ্কস, সিট-আপস, ক্রাঞ্চেস পেটের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং পেটকে টানটান রাখে।
- যোগব্যায়াম বা পিলেটসও পেটের পেশীকে দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন পানি পান করুন:
- ত্বককে হাইড্রেটেড রাখলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে এবং চামড়া ঝুলে যাওয়া কমে।
- সুস্থ খাদ্যাভ্যাস:
- গর্ভাবস্থায় এবং পরবর্তী সময়ে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন C, ই এবং জিংক ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- ভিটামিন C ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ময়েশ্চারাইজার ও তেল ব্যবহার:
- অলিভ অয়েল, কোকো বাটার, বা শিয়া বাটার ত্বকে ময়েশ্চার প্রদান করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।
- গর্ভাবস্থায় স্ট্রেচ মার্কস বা ত্বকের প্রসারণের কারণে ক্রিম বা তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ওজন ধীরে ধীরে কমানো:
- গর্ভাবস্থার পর খুব দ্রুত ওজন কমানো ত্বককে প্রভাবিত করে, তাই ধীরে ধীরে ওজন কমানো উচিত।
- বয়স:
- বয়সের সাথে সাথে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যেতে পারে। বয়স যত বাড়বে, ত্বক সঠিকভাবে পুনরুদ্ধার হতে সময় নেয়।
- স্ট্রেচ মার্কস থেকে বাঁচা:
- স্ট্রেচ মার্কস হলে তাদের কমানোর জন্য বিভিন্ন ক্রিম বা তেল ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়।
অতিরিক্ত পেট ঝুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসা:
- কিছু ক্ষেত্রে, যদি ত্বক এবং পেশী যথেষ্ট পুনরুদ্ধার না হয়, তবে প্লাস্টিক সার্জারি যেমন অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি বা টামি টাক করা যেতে পারে, তবে এটি একটি চরম পদক্ষেপ এবং উপযুক্ত পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থার পর পেটের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য উপরের পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আপনি কি গর্ভাবস্থার পর কিছু বিশেষ ব্যায়াম বা পরামর্শ চান?