পরজীবীতা (Parasitism) এবং প্রেডেশন (Predation) ব্যাখ্যা
প্রকৃতিতে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী-পারস্পরিক সম্পর্ক দেখা যায়। এর মধ্যে পরজীবীতা (Parasitism) এবং প্রেডেশন (Predation) দুটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
১. পরজীবীতা (Parasitism):
পরজীবীতা হলো এমন একটি সম্পর্ক, যেখানে একটি জীব (পরজীবী) অন্য জীবের (স্বামীজীব বা Host) শরীরে বা শরীরের অভ্যন্তরে বসবাস করে এবং তার পুষ্টি গ্রহণ করে। এতে পরজীবী উপকৃত হয়, কিন্তু স্বামীজীব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদাহরণ:
✅ উদ্ভিদের মধ্যে:
- কুসুম লতা (Cuscuta) → এটি একটি পরজীবী উদ্ভিদ, যা অন্য গাছের দেহ থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে।
- রাফলেসিয়া (Rafflesia) → এটি অন্য উদ্ভিদের মূল থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে।
✅ প্রাণীদের মধ্যে:
- ফিতাকৃমি (Tapeworm) → মানুষের অন্ত্রে বসবাস করে এবং খাদ্য গ্রহণ করে।
- ম্যালেরিয়া পরজীবী (Plasmodium) → মশার মাধ্যমে মানুষের রক্তে প্রবেশ করে এবং ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে।
- উকুন (Lice) → মানুষের মাথার ত্বকে বসবাস করে এবং রক্ত শোষণ করে।
২. প্রেডেশন (Predation):
প্রেডেশন হলো এমন একটি সম্পর্ক, যেখানে একটি জীব (শিকারি বা Predator) অন্য জীবকে (শিকার বা Prey) ধরে খেয়ে ফেলে। এতে শিকারি উপকৃত হয়, কিন্তু শিকার মারা যায়।
উদাহরণ:
✅ উদ্ভিদের মধ্যে:
- পিচার প্ল্যান্ট (Pitcher Plant) → এটি পোকামাকড় ধরে খায়।
- ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ (Venus Flytrap) → এটি তার পাতার ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা ধরে হজম করে।
✅ প্রাণীদের মধ্যে:
- বাঘ ও হরিণ → বাঘ হরিণ শিকার করে খায়।
- সাপ ও ব্যাঙ → সাপ ব্যাঙকে ধরে খায়।
- বাজপাখি ও খরগোশ → বাজপাখি খরগোশ শিকার করে খায়।
মূল পার্থক্য:
উপসংহার:
পরজীবীতা এবং প্রেডেশন উভয়ই প্রকৃতির খাদ্য শৃঙ্খলার অংশ। পরজীবীরা স্বামীজীবকে মেরে ফেলে না বরং দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকার জন্য নির্ভর করে, কিন্তু শিকারি তার শিকারকে হত্যা করে এবং তা খেয়ে নেয়।