সূর্যের উত্তরায়ণ হলো একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা, যা প্রতি বছর ঘটে যখন সূর্য তার দক্ষিণ থেকে উত্তর গোলার্ধে গমন শুরু করে এবং ক্রমে উত্তর দিকে সরতে থাকে। এটি সাধারণত ২১ বা ২২ ডিসেম্বর শুরু হয় এবং ২১ বা ২২ জুন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।


উত্তরায়ণের ব্যাখ্যা

  1. অর্থ:
    উত্তরায়ণ শব্দের অর্থ হলো “উত্তরের দিকে গমন।” সূর্য যখন কর্কটক্রান্তি রেখার দিকে ধাবিত হয়, তখন তাকে উত্তরায়ণ বলে।
  2. কারণ:
    পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষ ২৩.৫° কাত হয়ে রয়েছে। এর ফলে সূর্যের অবস্থান বিভিন্ন সময়ে ক্রান্তি রেখার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে পরিবর্তিত হয়।
  3. সময়কাল:
    সূর্যের উত্তরায়ণ সাধারণত মকর সংক্রান্তি (১৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়, যদিও এটি জ্যোতির্বিদ্যায় ২১ বা ২২ ডিসেম্বর থেকে গণনা করা হয়।
  4. উত্তরায়ণের শেষে:
    উত্তরায়ণ ২১ বা ২২ জুনে কর্কটক্রান্তি রেখায় পৌঁছে শেষ হয়, যা বছরের সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন হিসেবে পরিচিত।

উত্তরায়ণের প্রভাব

  1. দিনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি:
    উত্তরায়ণের সময় উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে।
  2. গ্রীষ্মের আগমন:
    এই সময়ে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্ম শুরু হয়, এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শীত।
  3. জীবনযাত্রার প্রভাব:
    ফসলের চাষাবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত।

ধর্মীয় গুরুত্ব

বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সূর্যের উত্তরায়ণকে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। মকর সংক্রান্তি হলো এই সময়ের একটি প্রধান উৎসব।


উপসংহার

সূর্যের উত্তরায়ণ প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যা পৃথিবীর জলবায়ু এবং জীবজগতের ওপর প্রভাব ফেলে। এটি শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞান নয়, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসেরও অংশ।