ইসলামে বিবাহের মূল উদ্দেশ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র। এটি শুধু একটি সামাজিক চুক্তি নয়, বরং পারিবারিক, ব্যক্তিগত, এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ।
ইসলামে বিবাহের মূল উদ্দেশ্য
- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন:
বিবাহ একটি ইবাদত। ইসলামে বিবাহের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার নৈতিক এবং শারীরিক চাহিদা পূরণ করে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার সুযোগ পায়।
- নৈতিক ও শারীরিক পবিত্রতা রক্ষা:
বিবাহ মানুষের শারীরিক চাহিদা পূরণের বৈধ এবং নৈতিক পথ। এটি জিনা বা অবৈধ সম্পর্ক থেকে মানুষকে রক্ষা করে।
কুরআনে বলা হয়েছে:
“তোমরা তাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিয়ে সম্পন্ন করো এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্য থেকে যারা ভালো, তাদেরও (বিবাহ করো)।” (সূরা আন-নূর, ২৪:৩২)
- সুখী ও স্থিতিশীল পরিবার গঠন:
বিবাহ পরিবার গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে। এটি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, দয়া এবং সহমর্মিতা সৃষ্টি করে।

কুরআনে বলা হয়েছে:
“আর তাঁর নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও করুণা স্থাপন করেছেন।” (সূরা আর-রূম, ৩০:২১)
- সন্তান জন্ম ও বংশধারা অব্যাহত রাখা:
সন্তানের মাধ্যমে বংশধারা অব্যাহত রাখা এবং তাদের সঠিক ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা বিবাহের অন্যতম উদ্দেশ্য।
নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
“তোমরা বিয়ে করো এবং সন্তান-সন্ততি জন্ম দাও, কারণ কিয়ামতের দিনে আমি আমার উম্মতের সংখ্যাধিক্যে গর্ব করব।” (আবু দাউদ)
- মানসিক এবং শারীরিক প্রশান্তি:
বিবাহ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধন তৈরি করে যা মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি প্রদান করে।
- সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা:
বিবাহের মাধ্যমে সমাজে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
উপসংহার:
ইসলামে বিবাহ শুধুমাত্র দুটি মানুষের মধ্যে একটি সম্পর্ক নয়; এটি আল্লাহর কাছে একটি চুক্তি এবং সমাজ ও পরিবারের প্রতি একটি দায়িত্ব। এর মাধ্যমে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভ করতে পারে। এজন্যই ইসলাম বিবাহকে উৎসাহিত করে এবং এটিকে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে গণ্য করে।