কেউ যদি আপনাকে গালি দেয় বা কষ্ট দেয়, তাহলে আপনি যদি রাগের কারণে তার সাথে কথা না বলেন, তাহলে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে—

১. ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা

  • তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা হারাম: হাদিসে আছে—
    “কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বলা বন্ধ রাখবে।” (সহিহ বুখারি: ৬০৭৬, সহিহ মুসলিম: ২৫৬০)
  • তবে যদি কথা বললে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বা শান্তির জন্য কিছুদিন দূরত্ব বজায় রাখা ভালো হয়, তাহলে তা নিন্দনীয় নয়।

২. উত্তম প্রতিদান ও ধৈর্য ধারণ করা

  • কুরআনে আল্লাহ বলেন—
    “যারা রাগ সংবরণ করে এবং মানুষের অপরাধ ক্ষমা করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।” (সূরা আলে ইমরান: ১৩৪)
  • রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সত্যিকারের শক্তিশালী সে-ই, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।” (সহিহ বুখারি: ৬১১৪, সহিহ মুসলিম: ২৬০৯)

৩. কবে কথা বন্ধ রাখা জায়েজ হতে পারে?

  • যদি কেউ ক্রমাগত আপনাকে অপমান করে বা অন্যায় করে, এবং আপনি বুঝতে পারেন যে তার সাথে সম্পর্ক রাখলে সমস্যা বাড়বে, তাহলে তার থেকে দূরত্ব রাখা যেতে পারে।
  • তবে মনের মধ্যে বিদ্বেষ রাখা উচিত নয়, বরং আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত যেন তিনি আপনাকে ধৈর্য ধরার শক্তি দেন।

সর্বোত্তম সমাধান:

  • উত্তম চরিত্র দেখানো, দোয়া করা, এবং পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
  • যদি সম্ভব হয়, ক্ষমা করে দিন, কারণ ক্ষমা করা বড় গুণ।
  • তবে যদি কেউ আপনাকে ক্রমাগত কষ্ট দেয়, তাহলে সীমা রক্ষা করা এবং নিজেকে মানসিকভাবে সুরক্ষিত রাখা জায়েজ।

উপসংহার:

আপনি যদি রাগ বা প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব থেকে চিরতরে সম্পর্ক ছিন্ন করেন, তাহলে গুনাহ হতে পারে। তবে যদি সম্পর্ক রাখলে আপনার শান্তি নষ্ট হয় বা ক্ষতি হয়, তাহলে সীমিত পরিসরে দূরত্ব রাখা যেতে পারে, কিন্তু অন্তরে বিদ্বেষ পুষে রাখা উচিত নয়।