মেয়েদের পিরিয়ড (মাসিক/ঋতুস্রাব) হলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়া এবং কিছু ধর্মীয় ও শারীরিক বিষয় মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

১. পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি:

স্যানিটারি ন্যাপকিন/প্যাড ব্যবহার করুন: প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করা উচিত।
পিরিয়ড কাপ বা ট্যাম্পন: যদি আরামদায়ক মনে হয়, তবে ব্যবহার করতে পারেন।
পরিষ্কার থাকা: প্রতিবার প্যাড পরিবর্তনের পর উষ্ণ পানি ও সাবান দিয়ে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করুন।
ব্যথা হলে: উষ্ণ পানি পান করুন, পেটে গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুন বা প্রয়োজনে পেইনকিলার নিতে পারেন (ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে)।

২. খাবার ও বিশ্রাম:

পুষ্টিকর খাবার খান: আয়রন ও প্রোটিনযুক্ত খাবার (ডাল, ডিম, মাছ, মাংস, শাকসবজি) গ্রহণ করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীর আর্দ্র রাখলে পিরিয়ডের সময় দুর্বলতা কম হয়।
ভালোভাবে বিশ্রাম নিন: পর্যাপ্ত ঘুম নিলে শারীরিক অস্বস্তি কম অনুভূত হবে।

৩. ধর্মীয় দিক (ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে):

নামাজ ও রোজা রাখা নিষেধ: মাসিক চলাকালীন সময়ে নামাজ পড়তে হয় না, রোজাও রাখা যায় না। তবে পরবর্তী সময়ে রোজা কাজা করতে হয়, কিন্তু নামাজ কাজা করতে হয় না।
কুরআন স্পর্শ করা বা তেলাওয়াত করা: সরাসরি কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ, তবে মুখস্থ আয়াত তেলাওয়াত করা যায়।
মসজিদে প্রবেশ: সাধারণত মাসিক অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা বা সেখানে অবস্থান করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
শারীরিক সম্পর্ক: পিরিয়ড চলাকালীন স্বামী-স্ত্রীর মিলন হারাম, তবে অন্যান্য ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করা যেতে পারে।

৪. কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন?

⚠️ অস্বাভাবিক বেশি রক্তপাত হলে (৭ দিনের বেশি স্থায়ী হলে বা খুব বেশি ব্লিডিং হলে)।
⚠️ অত্যাধিক ব্যথা হলে, যা স্বাভাবিক ব্যথার চেয়ে বেশি এবং সহ্য করতে কষ্ট হয়।
⚠️ অনিয়মিত পিরিয়ড হলে, যেমন ৩ মাস বা তার বেশি সময় ধরে মাসিক না আসা।
⚠️ গন্ধযুক্ত বা অস্বাভাবিক রঙের রক্তক্ষরণ হলে, যা সংক্রমণের ইঙ্গিত দিতে পারে।

সংক্ষেপে:

মাসিক চলাকালীন পরিচ্ছন্ন থাকা, সঠিক খাবার ও বিশ্রাম নেওয়া এবং ধর্মীয় বিধান মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।