সহবাসের সময় যোনিতে জ্বালা বা পোড়া ভাব: কারণ ও করণীয়
সহবাস বা যৌন মিলন একটি স্বাভাবিক ও স্বতঃসিদ্ধ বিষয়, তবে অনেক নারী সহবাসের সময় যোনিতে জ্বালা বা পোড়াভাব অনুভব করেন। এটি শুধু অস্বস্তিকর নয়, অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে মানসিক দূরত্বও তৈরি করে। এই সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা চিকিৎসাযোগ্য বা প্রতিরোধযোগ্য।
চলুন জেনে নিই এর পেছনের কারণগুলো এবং করণীয় সম্পর্কে।
১. যোনির শুষ্কতা (Vaginal Dryness)
সহবাসের সময় যোনিতে প্রাকৃতিকভাবে যে তরল নিঃসরণ হওয়ার কথা, তা যদি না হয় বা পর্যাপ্ত না হয়, তাহলে ঘর্ষণের ফলে জ্বালা বা পোড়া ভাব সৃষ্টি হয়।
সম্ভাব্য কারণ:
- পর্যাপ্ত উত্তেজনা না হওয়া
- সন্তান জন্মের পরবর্তী সময়
- মেনোপজ বা হরমোনের পরিবর্তন
- কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ (যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, অ্যান্টিহিস্টামিন)
সমাধান:
- ভালভাবে ফোরপ্লে করা
- ওয়াটার-বেজড লুব্রিকেন্ট ব্যবহার
২. ইনফেকশন (সংক্রমণ)
ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI), ইস্ট ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হলে সহবাসের সময় জ্বালা বা ব্যথা হতে পারে।
লক্ষণ:
- দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
- চুলকানি
- পায়খানার সময় জ্বালা
- সহবাসের সময় ব্যথা বা জ্বালা
সমাধান: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ওষুধ সেবন এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
৩. কেমিক্যাল এলার্জি বা রিঅ্যাকশন
কনডমে থাকা ল্যাটেক্স, সুগন্ধযুক্ত সাবান বা লুব্রিকেন্টে থাকা কেমিক্যাল থেকেও এলার্জি বা জ্বালা হতে পারে।
সমাধান:
- অ্যালার্জি মুক্ত কনডম বা লুব্রিকেন্ট ব্যবহার
- যোনির আশপাশে সুগন্ধযুক্ত সাবান বা ওয়াইপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা
৪. মানসিক চাপ ও ভয়
যৌনতা নিয়ে ভয়, অপরিচিততা বা মানসিক অস্বস্তি থাকলে শরীর স্বাভাবিকভাবে সাড়া দিতে পারে না। ফলে যোনিপথে চাপ পড়ে এবং জ্বালা লাগে।
সমাধান:
- সঙ্গীর সাথে খোলামেলা যোগাযোগ
- ধীরে ধীরে মিলনের দিকে এগোনো
- প্রয়োজন হলে কাউন্সেলিং
৫. যৌনবাহিত রোগ (STD)
যদি সঙ্গীর কোনো সংক্রমণ থাকে এবং তা যৌনমিলনের মাধ্যমে ছড়ায়, তাহলে জ্বালা বা পোড়া ভাব হতে পারে।
সমাধান:
- উভয়ের STD পরীক্ষা করানো
- সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ
- ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষিত যৌনতা চর্চা
শেষ কথা
সহবাসের সময় যোনিতে জ্বালা বা পোড়া লাগা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি অবহেলা করলে বড় কোনো সংক্রমণ বা মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই উপসর্গ দেখা দিলে লজ্জা না করে একজন গাইনোকলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
সুস্থ দাম্পত্য জীবনের জন্য উভয়ের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা, যত্নশীলতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।