ইসলাম এবং স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রীর সাথে সহবাসের কিছু আদব ও শিষ্টাচার রয়েছে, যা মানলে দাম্পত্য জীবন আরও সুন্দর ও বরকতময় হয়।
সহবাসের গুরুত্বপূর্ণ আদব ও শিষ্টাচার:
১. বিশুদ্ধ নিয়ত ও দোয়া:
- সহবাস শারীরিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা বৃদ্ধির ও নেক সন্তান লাভের একটি মাধ্যম।
- সহবাসের আগে এই দোয়াটি পড়া সুন্নত: اللهم جنبنا الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا
উচ্চারণ: Allahumma jannibna ash-shayṭān, wa jannib ash-shayṭān mā razaqtana.
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন, তাকে শয়তান থেকে রক্ষা করুন।”
(বুখারি, মুসলিম)
২. পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও নম্রতা:
- স্ত্রীকে ভালো কথা, আদর ও স্নেহপূর্ণ আচরণ করা সুন্নত।
- হঠাৎ বা জোর করে কিছু না করে, পরস্পরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা উচিত।
৩. শালীনতা বজায় রাখা:
- অতিরিক্ত আলোতে সহবাস না করা উত্তম।
- সম্পূর্ণ উলঙ্গ না হয়ে চাদর বা পাতলা কাপড় ব্যবহার করা ভালো। (আবু দাউদ, তিরমিজি)
৪. সহবাসের অবস্থান:
- স্ত্রীকে পেছন দিক থেকে সহবাস করা নিষিদ্ধ, যদি তা পায়ুপথে হয়। (ইবনে মাজাহ)
- তবে সামনের দিক থেকে বা যে কোনো অবস্থানে করা বৈধ, যতক্ষণ না হারাম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
৫. স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দেওয়া:
- শুধু নিজের চাহিদা মিটিয়ে সরে না গিয়ে, স্ত্রীর যৌন চাহিদা ও তৃপ্তির দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি। (মুসনাদে আহমাদ)
৬. সহবাসের পর পবিত্রতা:
- সহবাসের পর গোসল (গোসলে জানাবাত) করা ফরজ।
- যদি পূর্ণাঙ্গ গোসল সম্ভব না হয়, তাহলে অজু করে ঘুমানো সুন্নত। (বুখারি, মুসলিম)
৭. নির্দিষ্ট সময়ে সহবাস বর্জন:
- স্ত্রীর মাসিক চলাকালে সহবাস করা হারাম। (সুরা বাকারা ২:২২২)
- রমজানের রোজার সময় (ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত) সহবাস করা নিষেধ। (সুরা বাকারা ২:১৮৭)
উপসংহার:
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শুধু শারীরিক নয়, বরং ভালোবাসা, সম্মান ও পারস্পরিক দায়িত্ববোধের মাধ্যমে সুখী জীবন গঠনের উপায়। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী সহবাস করলে তাতে শারীরিক ও আত্মিক প্রশান্তি পাওয়া যায় এবং দাম্পত্য জীবন বরকতময় হয়।