সনাতন ধর্ম বা হিন্দুধর্মে মদ্যপান এবং জুয়া খেলা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, কারণ এসব কর্মকাণ্ড মানুষের শরীর, মন এবং আত্মার প্রতি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী।
মদ্যপান সম্পর্কে সনাতন ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি:
- শরীরের অপব্যবহার: সনাতন ধর্মে শরীরকে একটি পবিত্র জ্ঞান এবং ঈশ্বরের দেবতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মদ্যপান শরীরকে অপব্যবহার এবং অপবিত্র করার একটি মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। যেহেতু এটি মনের উপর প্রভাব ফেলে এবং শারীরিক ও আত্মিক অশুদ্ধতা সৃষ্টি করে, তাই এটি নিষিদ্ধ।
- মদ্যপান ও সত্ত্বধর্মের পরিপন্থী: মদ্যপান মানুষের চারিত্রিক উন্নতি এবং আত্মিক উন্নতির পথকে বাধাগ্রস্ত করে। শ্রীমদ্ভগবদগীতা ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে শরীরের অশুদ্ধতা এবং অবাধ্যতা পরিহারের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
- মদ্যপানের ক্ষতিকর প্রভাব: ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী, মদ্যপান মানুষের বিচারবোধকে দুর্বল করে এবং তাকে অসৎ ও অমানবিক আচরণ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
জুয়া খেলা সম্পর্কে সনাতন ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি:
- অর্থ উপার্জনের অবৈধ উপায়: সনাতন ধর্মে উপার্জনকে উচিত পদ্ধতিতে অর্জন করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জুয়া খেলা অর্থ উপার্জনের অবৈধ এবং অপ্রামাণিক উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি মানুষের নৈতিক দৃষ্টিকোণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
- অপচয় ও মানসিক চাপ: জুয়া খেলা একটি ক্ষতিকর অভ্যাস, যা অর্থ ও সময়ের অপচয় সৃষ্টি করে। এটি মানুষের মানসিক শান্তি ও স্থিরতা নষ্ট করতে পারে এবং তার আত্মিক উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে।
- ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী: শ্রীমদ্ভগবদগীতা ও অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থে সততা, পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়কে উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। জুয়া খেলা এসব মূল্যবোধের বিপরীতে যায় এবং মানুষের চরিত্রকে দুর্বল করে।
উপসংহার:
সনাতন ধর্মে মদ্যপান ও জুয়া খেলা নিষিদ্ধ এবং এগুলোকে মানুষের শারীরিক ও আত্মিক ক্ষতি হিসেবে দেখা হয়। ধর্মীয় আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং নৈতিক জীবনযাপনের জন্য এসব থেকে বিরত থাকা উচিত।