সারসংক্ষেপ
ভৌত বিজ্ঞান (Physical Science) হলো প্রকৃতির অজীবিত (non-living) দুনিয়ার গঠন, আচরণ ও সম্পর্কসমূহ অধ্যয়নকারী বিজ্ঞানশাখা। এতে প্রধানত পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ভূবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গবেষণার প্রধান পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয় পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষাগার পরীক্ষণ, পরিমাপ ও গাণিতিক বিশ্লেষণ, যা প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোকে নির্ভুলভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়।
ভৌত বিজ্ঞান কী?
ভৌত বিজ্ঞান বলতে বোঝায় সেই সমস্ত বিজ্ঞানশাখাকে, যা অজীবিত বস্তু এবং তাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া অধ্যয়ন করে । এটি জীববিজ্ঞানের (Life Science) পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে অজীবিত বস্তু ও প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করে । Merriam-Webster অনুযায়ী, ভৌত বিজ্ঞান হলো “such as physics, chemistry, and astronomy, that deal primarily with nonliving materials” । Britannica গ্রন্থে এর সংজ্ঞা অনুসারে, এটি ‘অজৈব বিশ্ব’ বা ‘inorganic world’ এর বৈজ্ঞানিক তথা পদ্ধতিগত অধ্যয়ন ।
মূল শাখাসমূহ
পদার্থবিজ্ঞান (Physics)
পদার্থবিজ্ঞান হলো পদার্থ, শক্তি, শক্তি-স্থানান্তর ও বলের কর্ম সম্পর্ক অধ্যয়নকারী শাখা । এটির মাধ্যমে মহাবিশ্বের মৌলিক নিয়মাবলী ও গঠন বোঝা যায় ।
রসায়ন (Chemistry)
রসায়ন হলো পদার্থের গঠন, সম্পৃক্তি, বিক্রিয়া ও পরিবর্তন প্রক্রিয়া অধ্যয়ন করে । এটি অণু, পরমাণু ও আণবিক স্তরে সংঘটিত প্রতিক্রিয়ার মাপকাঠি নির্ধারণে জরুরি ভূমিকা রাখে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy)
জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাকাশ, নক্ষত্র, গ্রহপুঞ্জ ও মহাজাগতিক ঘটনা নিয়ে কাজ করে । এটি পর্যবেক্ষণ মূলক গবেষণার উপর নির্ভর করে, যেমন দূরবীক্ষণ (telescopes) ও আনুবীক্ষণিক (spectroscopy) পদ্ধতি ব্যবহার ।
ভূবিজ্ঞান (Earth Science)
ভূবিজ্ঞান পৃথিবীর গঠন, ভূমি, জলবায়ু, ভূ-প্রক্রিয়া ও পরিবেশগত পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে । এতে অন্তর্ভুক্ত সেক্টরগুলো হলো ভূতত্ত্ব, জলবিজ্ঞান, আবহাওয়া বিজ্ঞান ও পরিবেশবিজ্ঞান।
বৈশিষ্ট্য ও গবেষণাপদ্ধতি
- পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ: ভৌত বিজ্ঞান নির্ভুল পরীক্ষাগার পরীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভরশীল ।
- পরিমাপ ও গাণিতিক বিশ্লেষণ: উপাত্ত সংগ্রহ করে গাণিতিক মডেল ও সুত্রাবলীর মাধ্যমে বিশ্লেষণ চালানো হয় ।
- পুনরাবৃত্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ: ফলাফল বিশ্বাসযোগ্য করতে বিভিন্ন গবেষক একই পদ্ধতি ব্যবহার করে পুনরায় পরীক্ষা করে দেখেন ।
উপসংহার
ভৌত বিজ্ঞান আমাদের চারপাশের অজীবিত বিশ্বের নিয়মাবলী ও গঠন বোঝাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর বিভিন্ন শাখা একত্রিত হয়ে প্রযুক্তি, চিকিৎসা, পরিবেশ ও মহাকাশ গবেষণায় অসীম অবদান রাখছে। ভবিষ্যতে এ শাখায় আরও উন্নত পরীক্ষণ পদ্ধতি ও মডেল উদ্ভাবন বিশ্বকে বৈজ্ঞানিক অভ্যুত্থানে এগিয়ে নিয়ে যাবে।