নিম্নোক্ত সারাংশে বাদামের প্রধান স্বাস্থ্যগত উপকারিতা তুলে ধরা হলো, পরে বিস্তারিত বিভাগভিত্তিক ব্যাখ্যা দেয়া হল:

সারসংক্ষেপে, বাদামগুলি উচ্চমাত্রায় মনো- এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ; ফলে এগুলো হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল সঠিক রাখা, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নয়ন, পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক । নিয়মিত বাদাম খাওয়া দীর্ঘায়ু বাড়াতে এবং সমস্ত-কারণজনিত মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ।


পুষ্টি উপাদান

বাদাম সাধারণত কম কার্বোহাইড্রেট, উচ্চ ফ্যাট ও প্রোটিন যুক্ত ।
বিভিন্ন বাদামে (যেমন বাদাম, আখরোট, পেস্তারা) প্রোটিন ১৫–২৪%, মোট ফ্যাট ৪৪–৬৫% এবং ফাইবার ১০–১৩% পর্যন্ত থাকে ।
এছাড়া এগুলো ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম, ফলেট, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম-এ সমৃদ্ধ ।


হৃদরোগ প্রতিরোধ

নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে LDL (“খারাপ”) কোলেস্টেরল কমে এবং HDL (“ভালো”) কোলেস্টেরল বাড়ে ।
বহু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে দুইবারের বেশি বাদাম খাওয়া হলে হার্ট অ্যাটাক, হঠাৎ কার্ডিওভাসকুলার মৃত্যুর ঝুঁকি ৩০–৫০% কমে যায় ।
বাদামের মনোস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে ।


মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য

বাদাম ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাল উৎস, যা নিউরোলজিক্যাল ক্ষয় প্রক্রিয়া ধীর করে ।
অ্যামিগডালিন ও ফেনোলিক যৌগ মস্তিষ্কে প্রদাহ কমিয়ে স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে ।


ওজন নিয়ন্ত্রণ

যদিও বাদামে ক্যালোরি বেশি, গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে সুস্থ ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে ।
বাদামের ফাইবার ও প্রোটিন স্যাটিয়াটি বাড়িয়ে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ কমায় ।


রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ

বাদামের কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং উচ্চ ফাইবার ব্লাড সুগার লেভেল স্টেবল রাখতে সহায়ক ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত বাদাম খাওয়া ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত করে ।


দীর্ঘায়ু ও মোট-মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস

একটি ২০১৩ সালের অধ্যয়নে দেখা গেছে, দিনে একটি সার্ভিং বাদাম খেলে সমস্ত-কারণজনিত মৃত্যু ঝুঁকি ২০–৩০% পর্যন্ত কমে ।
২০২২ সালের একটি আমব্রেলা রিভিউতে বাদাম খাওয়ার সঙ্গে মোট মৃত্যুহার ২২% হ্রাস পাওয়ার উল্লেখ আছে ।


পরিপাকতন্ত্র ও গাট হেলথ

বাদামে উপস্থিত ফাইবার ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা হজমে বল দেয় এবং প্রদাহ কমায় ।
মেদজাত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখে ।


উপসংহার: বাদাম হচ্ছে সুপারফুড-ধরনের একটি খাবার, যা নিয়মিত প্রয়োজনে মাত্রা মেনেই খেলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ওজন সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাসসহ নানা সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করে, দীর্ঘায়ু বাড়ায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।