প্রোটিন খাওয়ার সময় নির্ধারণ বিষয়ে সামগ্রিক গবেষণা থেকে জানা যায় যে—প্রোটিনের মোট পরিমাণ এবং দেহে সমভাবে বণ্টন করাটাই মূল, যদিও অনেকে ব্যায়ামের আগে বা পরে তা খেতেও উৎসাহী হন। সকালের নাস্তা, দিনের প্রধান তিনটি খাবার এবং ব্যায়ামের পর দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রোটিন গ্রহণ করলে মাসল প্রোটিন সিন্থেসিস (MPS) এবং পেশী শেকোরোধনে সহায়তা পাওয়া যায়। এছাড়া, রাতে ঘুমের আগে ধীরে মুক্তি পায় এমন কেসিন প্রোটিন নিলে রাত্রিকালীন সময়ে পেশী পুনর্গঠনে অবদান রাখতে পারে।
সকালের নাস্তা
প্রোটিন প্রথম খাবারে (ব্রেকফাস্ট) গ্রহণ করলে দীর্ঘক্ষণ স্যাটিয়াটি বজায় থাকে এবং দিনভর এনার্জি লেভেল স্টেবল থাকে । UH Hospitals অনুসারে, সকালেই ডিম, দুধ বা যোগুর্ট ইত্যাদি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার নিলে দিনের শুরুতেই পুষ্টি পুনরুদ্ধার হয় ।
দিনের প্রধান তিনটি খাবারে সমভাবে বণ্টন
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোটিন প্রতিটি প্রধান খাবারে (প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, রাত্রিভোজ) প্রায় ২৫–৩০ গ্রাম করে ভাগ করলে মাসল প্রোটিন সিন্থেসিস সবচেয়ে উচ্চ হয় । Mayo Clinic Health System এর মতে, প্রোটিনের বেশি অংশ এক বেলায় না খেয়ে সারাদিনে সমভাবে গ্রহন করাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ ।
ব্যায়ামের আগে এবং পরে
বেশিরভাগ গবেষণা অনানুষ্ঠানিক “এনাবলিক উইন্ডো” ধারণাটিকে পরিমাপ করেছে এবং দেখিয়েছে—ব্যায়ামের ১৫–৬০ মিনিট পর কেনা প্রোটিন শরীরে দ্রুত শোষিত হলেও, অধিকাশ সময় পর্যন্ত (দুই ঘণ্টা পর্যন্ত) তা গ্রহণ করলেও মাসল গেইন প্রভাব কমে না । International Society of Sports Nutrition ২০২৫ সালের রিকোমেন্ডেশনে বলা হয়েছে, ব্যায়ামের দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রোটিন গ্রহন ইন্টারভাল রেখে মাসল বিল্ডিং এ সহায়ক ।
ব্যায়ামের আগে
যদি এক ঘণ্টার বেশি না ব্যায়াম করেন, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের প্রয়োজন নেই—শক্তি পেতে কার্বোহাইড্রেট প্রধান, প্রোটিন পরবর্তী সময়কার জন্য । দুই ঘণ্টার বেশি সেশন হলে হালকা কার্ব+প্রোটিন স্ন্যাক্স নিতে পারেন, যেমন বাদাম ও দুধ ।
ব্যায়ামের পরে
পেশী শেকোরোধন রোধে এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারে ব্যায়নের পর ১৫–১২০ মিনিটের মধ্যে ২০–৩০ গ্রাম প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বা শেক গ্রহণ করা যেতে পারে । Peloton এর বিশেষজ্ঞ Amy Stephens বলেন, “ব্যায়নের পর প্রোটিন হল মাসল-বিল্ডিং পুষ্টি” ।
রাতে প্রোটিন
কেসিন প্রোটিন ধীরে ধীরে অ্যামিনো অ্যাসিড মুক্ত করে, যা রাত্রিকালীন সময়ে পেশী ভাঙা প্রতিরোধে কার্যকর । তবে এটি প্রয়োজনীয়তা অনুসারে গ্রহণ করতে হবে—সর্বদা মোট দেহজনিত প্রোটিন হিসেবেই ব্যালেন্স রাখতে হবে।
গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ দিক
- সমগ্র দিনে বণ্টন: খাবারের মধ্যে সমভাবে প্রোটিন রাখলে মাসল সিন্থেসিস বাড়ে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ হয় ।
- মোট প্রোটিন পরিমাণ: দৈনিক ০.৮–১.২ গ্রাম/কেজি বডিওয়েট সাধারণত পর্যাপ্ত, ক্রীড়াবিদদের জন্য ১.২–২.০ গ্রাম/কেজি বেধরানোর সুপারিশ ।
- অন্যান্য পুষ্টি: প্রোটিনের সাথে ফাইবার, ভিটামিন ও কার্বোহাইড্রেটও ব্যালেন্স করতে হবে; অতিরিক্ত প্রোটিন অন্য পুষ্টির জায়গা দখল করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে ।
সারাংশ: সারাদিনে সমভাবে ভাগ করে প্রতিটি প্রধান খাবারে (২৫–৩০ গ্রাম), সকালের নাস্তা, ব্যায়ামের পর দুই ঘণ্টার মধ্যে এবং রাতের ঘুমের আগে (প্রয়োজনে কেসিন) প্রোটিন গ্রহণ সেরা, সাথে মোট দৈনিক প্রয়োজনীয়তা বজায় রাখতে হবে।