সারসংক্ষেপ
দ্রুত ওজন বাড়াতে প্রয়োজন ক্যালরি-ঘন, পুষ্টিযুক্ত খাবার যা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে । বাদাম ও বাদামের মাখন, সম্পূর্ণচর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত, স্টার্চ-সমৃদ্ধ শস্য ও সবজি, স্বাস্থ্যকর তেল, প্রোটিন স্মুদি ও উচ্চ-ক্যালরি ফলগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে শরীরের ক্যালরি লাভ দ্রুত বৃদ্ধি পায় । তবে, শুধুমাত্র ফাঁকা ক্যালরি (জাঙ্ক ফুড) নয়; পুষ্টি ভারসাম্য বজায় রেখে ওজন বাড়ানোই দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যসম্মত ।
দ্রুত ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রধান খাবারসমূহ
১. বাদাম ও বাদামের মাখন
বাদাম যেমন আলমন্ড, আখরোট ও কাজু উচ্চ ক্যালরি তথা স্বাস্থ্যকর মনো- এবং পলিয়ান্স্যাচুরেটেড ফ্যাটের উৎস, যা এক আউন্সে (≈28 গ্রাম) প্রায় ১৫০–২০০ ক্যালরি যোগ করে ।
বাদামের মাখনে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ করা সহজ; ১ টেবিলচামচ পিনাট বাটার প্রায় ১০০ ক্যালরি দেয় ।
২. সম্পূর্ণচর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত
পূর্ণচর্বিযুক্ত দুধ, দই ও পনির প্রোটিন এবং ক্যালরিতে সমৃদ্ধ; এক কাপ পূর্ণ দুধে প্রায় ১৫০ ক্যালরি ও ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে ।
গ্রিক ইয়োগার্ট বা কটেজ চিজ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ফ্যাট যোগ করে, যা পেশী বৃদ্ধিতে সহায়ক ।
৩. স্টার্চ-সমৃদ্ধ শস্য ও শাকসবজি
সাদা বা ব্রাউন রাইস, ক্নয়োয়া, ওটমিল এবং গমের রুটি দ্রুত কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে, যা এক প্লেটে ২০০–৩০০ ক্যালরি যোগ করতে পারে ।
আলু ও মিষ্টি আলু (yam) তেল দিয়ে বেক বা ভাজা করে খেলে প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৫০–১৬০ ক্যালরি পাওয়া যায় ।
৪. স্বাস্থ্যকর তেল ও ফ্যাট
অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো তেল, ঘি বা বাটার গরম খাবারে বা সালাদে যোগ করলে প্রতি টেবিলচামচে ১২০–১৩৫ ক্যালরি বৃদ্ধি পায় ।
এছাড়াও অ্যাভোকাডোর প্রতিটি ফলেই প্রায় ২৪০ ক্যালরি থাকে, যা স্বাস্থ্যকর এককৃত ফ্যাট সরবরাহ করে ।
৫. প্রোটিন স্মুদি ও মিল্কশেক
হোমমেড স্মুদি—দুধ/দই, বাদামমাখন, ফল ও প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে—এক গ্লাসে ৪০০–৬০০ ক্যালরি যোগ করতে পারে ।
চকলেট মিল্কশেক বা ওটস স্মুদি পোস্ট-ওয়ার্কআউটে পেশী পুনরুদ্ধারে সহায়ক ।
৬. উচ্চ-ক্যালরি ফল
অ্যাভোকাডো, কোকোনাট ও ড্রায়-ফ্রুট যেমন খেজুর, কিশমিশ দ্রুত ক্যালরি যোগ করে ।
বিশেষ করে কলা ও আম—প্রতি মাঝারি কলায় ১০৫ ক্যালরি, প্রতি কাপ কাটা আমে ১০৪ ক্যালরি—দ্রুত কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে ।
কীভাবে খাওয়া উচিত
- ছোট ছোট খাবার বরাবর বিকেল: দিনে ৫–৬ বার ছোট পরিমাণে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে মোট ক্যালরি বৃদ্ধি করুন ।
- সাইড ডিশে ফ্যাট ও প্রোটিন: প্রতিটি খাবারে বাদামমাখন, চিজ বা ঘি যোগ করলে সহজেই ক্যালরি বৃদ্ধি পাওয়া যায় ।
- দ্রুত শুষ্ক স্ন্যাক্স: নাটস, ড্রায়-ফ্রুট, প্রোটিন বার দিয়ে দিনে অন্তত দুবার স্ন্যাকিং করুন ।
সতর্কতা ও সুপারিশ
- ফাঁকা ক্যালরি এড়িয়ে চলুন: গভীর ভাজা খাবার, সুগার-ভরা সফট ড্রিংক ও প্রসেস্ড স্ন্যাক্স ওজন বাড়াবে, কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াবে ।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা: কিডনি বা লিভার সমস্যা থাকলে উচ্চ ফ্যাট-যুক্ত খাবার নেয়া নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন ।
- শক্তি-দায়ক ব্যায়াম: ওজন বাড়ানোর সাথে সাথে হালকা ওজন উত্তোলন করলে পেশী গঠনে সহায়তা পাবে ।
উপসংহারে, নিয়মিত ও পরিকল্পিতভাবে উচ্চ-ক্যালরি, পুষ্টি-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে দ্রুত ওজন বাড়ানো সম্ভব; তবে স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং দীর্ঘমেয়াদে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
