দাজ্জালের সবচেয়ে বড় ফিতনা কী?

দাজ্জাল কিয়ামতের আগে মানুষের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর ফিতনা (পরীক্ষা) নিয়ে আসবে। নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

“আদম (আ.)-এর সৃষ্টির সময় থেকে কিয়ামত পর্যন্ত দাজ্জালের চেয়ে বড় কোনো ফিতনা নেই।” (সহিহ মুসলিম: ২৯৪৬)


দাজ্জালের সবচেয়ে বড় ফিতনা: নিজেকে ঈশ্বর দাবি করা

দাজ্জালের সবচেয়ে বড় ফিতনা হলো সে নিজেকে ঈশ্বর (প্রভু) দাবি করবে এবং মানুষকে বাধ্য করবে তাকে উপাস্য হিসেবে মানতে।

রাসুল (সা.) বলেছেন:
“দাজ্জাল আসবে এবং নিজেকে আল্লাহ বলে দাবি করবে।” (সহিহ বুখারি: ৭১৩১, সহিহ মুসলিম: ২৯৩৩)

কিন্তু সে মানুষই হবে—
✅ সে খাবে, পান করবে এবং ক্লান্ত হবে। (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৪)
✅ সে কোনোভাবেই আল্লাহ হতে পারে না।


দাজ্জালের ভয়ংকর অলৌকিক ক্ষমতা (মিথ্যা জাদু)

দাজ্জাল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে কিছু অলৌকিক কাজ দেখাবে, যা আসলে হবে ধোঁকা।

মৃত মানুষকে জীবিত করবে বলে দাবি করবে (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৬)
আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাবে এবং শুষ্ক জমিকে উর্বর করবে (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৭)
তার অনুসারীদের জন্য খাদ্য ও সম্পদ দেবে এবং যারা তার কথা মানবে না, তাদেরকে দারিদ্র্যে ফেলবে (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৮)
সে জান্নাত ও জাহান্নামের মতো কিছু আনবে, কিন্তু আসলে তার জান্নাত হবে জাহান্নাম (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) হুঁশিয়ার করেছেন:
“দাজ্জালের ফিতনা এত ভয়ংকর হবে যে, অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে তাকে আল্লাহ হিসেবে মেনে নেবে।” (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৭)


কাদের ওপর দাজ্জালের প্রভাব বেশি পড়বে?

যাদের ঈমান দুর্বল
যারা শুধু দুনিয়াবি স্বার্থ দেখে
যারা ইসলাম সম্পর্কে জানে না বা অবহেলা করে
বিশেষ করে ইহুদিরা হবে তার প্রধান অনুসারী (তিরমিজি: ২২৩৭, ইবনে মাজাহ: ৪০৭৪)


দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার উপায়

সুরা কাহাফের প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত মুখস্থ করা (সহিহ মুসলিম: ৮০৯)
দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া পড়া:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
দাজ্জালের কথা না শোনা ও তার থেকে দূরে থাকা (সহিহ মুসলিম: ২৯৩৭)


উপসংহার

দাজ্জালের সবচেয়ে বড় ফিতনা হলো সে নিজেকে আল্লাহ দাবি করবে এবং অলৌকিক ক্ষমতা দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। তার ধোঁকায় না পড়তে হলে আমাদের ঈমান শক্ত করতে হবে, ইসলামের জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া ও আমল করতে হবে।