ডিএনএ টেস্ট কীভাবে কাজ করে?
ডিএনএ (Deoxyribonucleic Acid) হলো আমাদের শরীরের জেনেটিক কোড, যা আমাদের পরিচয় নির্ধারণ করে। ডিএনএ পরীক্ষা নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সম্পর্ক শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
১. ডিএনএ টেস্টের ধাপসমূহ:
(১) নমুনা সংগ্রহ
ডিএনএ টেস্টের জন্য শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা নেওয়া হয়, যেমন:
✅ রক্ত – সিরিঞ্জ দিয়ে সংগ্রহ করা হয়।
✅ লালা (Saliva) – মুখের ভেতর থেকে কটন সোয়াব দিয়ে নেওয়া হয়।
✅ চুলের গোড়া – চুলের রুট থাকা জরুরি।
✅ ত্বকের কোষ বা নখ – দেহের মৃত কোষ থেকেও সংগ্রহ করা যায়।
✅ শুক্রাণু, ঘাম বা লালা – ক্রাইম সিন বা অন্যান্য পরিস্থিতিতে ব্যবহার হয়।
(২) ডিএনএ নিষ্কাশন (Extraction)
নমুনা সংগ্রহের পর ল্যাবে তা থেকে ডিএনএ আলাদা করা হয়। কেমিক্যাল প্রসেসের মাধ্যমে কোষ ভেঙে ডিএনএ বের করা হয়।
(৩) ডিএনএ এমপ্লিফিকেশন (PCR – Polymerase Chain Reaction)
ডিএনএ নমুনা যদি কম থাকে, তাহলে PCR টেকনিক ব্যবহার করে সেটিকে বহুগুণে বাড়ানো হয়।
(৪) ডিএনএ বিশ্লেষণ (STR Analysis)
✅ Short Tandem Repeat (STR) Analysis হলো সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি, যেখানে মানুষের অনন্য ডিএনএ মার্কার চিহ্নিত করা হয়।
✅ ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয় এবং তা অন্য নমুনার সঙ্গে তুলনা করা হয়।
(৫) ফলাফল নির্ধারণ
ডিএনএ নমুনা মিললে ৯৯.৯৯% নির্ভুলভাবে পিতৃত্ব বা অপরাধীর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব।
২. ডিএনএ টেস্টের ব্যবহার
✅ পিতৃত্ব/মাতৃত্ব পরীক্ষা – সন্তানের বাবা বা মা কে তা নির্ধারণ করতে।
✅ অপরাধ শনাক্তকরণ – ধর্ষণ, খুন বা চুরির ঘটনায় অপরাধী চিহ্নিত করতে।
✅ পারিবারিক সম্পর্ক পরীক্ষা – ভাই-বোন, আত্মীয়তার সম্পর্ক নির্ধারণ করতে।
✅ রোগ নির্ণয় – কিছু জেনেটিক রোগ শনাক্ত করতে।
৩. ডিএনএ টেস্টের নির্ভুলতা
- ৯৯.৯৯% নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়।
- তবে নমুনা সংরক্ষণ সঠিক না হলে বা দূষিত হলে পরীক্ষার ফলাফল ভুল হতে পারে।
উপসংহার
ডিএনএ টেস্ট খুবই নির্ভরযোগ্য একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, যা পরিচয় ও সম্পর্ক নির্ধারণে ব্যবহার করা হয়। এটি অপরাধী শনাক্তকরণ এবং পারিবারিক সম্পর্ক প্রমাণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।