পেট্রোল এবং পানি থেকে সরাসরি গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব নয়। তবে, কিছু রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে পেট্রোল বা পানির উপাদান থেকে জ্বালানি গ্যাস (যেমন: হাইড্রোজেন গ্যাস) উৎপাদন করা সম্ভব। নিচে উভয় প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হলো:


পেট্রোল থেকে গ্যাস উৎপাদন (ক্র্যাকিং প্রক্রিয়া):

পেট্রোল মূলত হাইড্রোকার্বন দিয়ে তৈরি, যা ভেঙে ছোট আকারের গ্যাস তৈরি করা যায়।

প্রক্রিয়া:

  1. থার্মাল ক্র্যাকিং:

উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপ ব্যবহার করে পেট্রোলের বড় হাইড্রোকার্বন অণুগুলো ছোট অণুতে ভেঙে দেওয়া হয়।

এতে মিথেন, ইথেন, প্রোপেন ইত্যাদি গ্যাস উৎপন্ন হয়।

  1. ক্যাটালিটিক ক্র্যাকিং:

একটি ক্যাটালিস্ট ব্যবহার করে পেট্রোল ভেঙে প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিনগ্যাস তৈরি করা হয়।

এই প্রক্রিয়ায় প্রোপেন এবং বুটেনের মতো গ্যাস উৎপন্ন হয়।

ব্যবহার:

জ্বালানি গ্যাস তৈরি করে রান্না বা গাড়িতে ব্যবহারের জন্য।


পানি থেকে গ্যাস উৎপাদন (ইলেক্ট্রোলাইসিস):

পানি থেকে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনের জন্য ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

প্রক্রিয়া:

  1. ইলেক্ট্রোলাইসিস মেশিনে পানি প্রবেশ করান।
  2. একটি বৈদ্যুতিক ধারা চালিয়ে পানির অণু (H₂O) ভেঙে হাইড্রোজেন (H₂) এবং অক্সিজেন (O₂) উৎপন্ন করা হয়।

ক্যাথোডে:

অ্যানোডে:

ব্যবহার:

হাইড্রোজেন গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায় (যেমন, ফুয়েল সেল গাড়ি)।


মিশ্র পদ্ধতি:

পেট্রোল বা অন্য জ্বালানির সঙ্গে পানি ব্যবহার করে রিফর্মিং প্রক্রিয়া (Steam Reforming) এর মাধ্যমে সিনগ্যাস (হাইড্রোজেন + কার্বন মনোক্সাইড) উৎপাদন করা হয়।

Steam Reforming Process:

পেট্রোলের বাষ্পের সঙ্গে পানি উচ্চ তাপমাত্রায় (700-1000°C) রিফর্মার ক্যাটালিস্ট ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়া ঘটানো হয়।

প্রতিক্রিয়া:

ব্যবহার:

শিল্পে অ্যামোনিয়া তৈরি, ফুয়েল সেল প্রযুক্তি, ইত্যাদিতে।


উপসংহার:

পেট্রোল থেকে গ্যাস: থার্মাল বা ক্যাটালিটিক ক্র্যাকিং।

পানি থেকে গ্যাস: ইলেক্ট্রোলাইসিস।

উভয় পদ্ধতি জটিল এবং উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর, তাই ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটি বাস্তবায়ন কঠিন।

এটি চালু করতে হলে আপনাকে উন্নত প্রযুক্তি এবং কারিগরি দক্ষতার প্রয়োজন হবে।